রাজতন্ত্রবাদীদের অভিযোগ, ওলির সরকার প্রতিবাদীদের উপর অত্যধিক কঠোর নীতি প্রয়োগ করছে। সেই কারণেই শুক্রবারের পরিস্থিতি হিংসাত্মক হয়ে পড়েছিল। শাসক জোট এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। নেপাল সরকারের সূত্র উল্লেখ করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, প্রাক্তন রাজার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের ভাবনাচিন্তা চলছে। তাঁকে গ্রেফতার করা হতে পারে বা গৃহবন্দি করে রাখা হতে পারে। জ্ঞানেন্দ্রের যাতায়াতের স্বাধীনতাও খর্ব করা হতে পারে।
রাজতন্ত্র চেয়ে নেপাল বিক্ষোভে প্রাক্তন রাজাকেই দায়ী করল সরকার তার রক্ষী সংখ্যা কমল।
৩১ মার্চ ২০২৫
রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবি জোরালো হচ্ছে নেপালে। বাড়ছে ক্ষোভ। শুক্রবার এই দাবিতে পথে নেমেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। একাধিক জায়গায় সেই বিক্ষোভ হিংসাত্মক রূপ নিয়েছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহকে গ্রেফতারির দাবি উঠেছে। ইতিমধ্যে তাঁর নিরাপত্তায় কাটছাঁট করেছে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সরকার।
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে কাঠমান্ডুর ‘নির্মল নিবাস’-এ সাধারণ নাগরিক হিসাবে থাকেন জ্ঞানেন্দ্র। সেখানে এত দিন তাঁর নিরাপত্তার জন্য ২৫ জন রক্ষী নিযুক্ত ছিলেন। শুক্রবারের বিক্ষোভের পর তা কমিয়ে ১৬ জন করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, জ্ঞানেন্দ্রের উস্কানিতেই রাজতন্ত্রের দাবিতে পথে নেমেছিলেন তাঁর সমর্থকেরা। পরিকল্পনা করে তাঁরা দেশে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করছেন। নেপালের সিপিএনইউএমএল (কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল-ঐক্যবদ্ধ মার্কসবাদী লেনিনবাদী) এবং নেপালি কংগ্রেসের শাসক জোট প্রাক্তন রাজার গ্রেফতারির দাবিতে সরব হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে রাজতন্ত্রবাদী রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টির বাদানুবাদে সংসদ মুলতুবি হয়ে গিয়েছে।
রাজতন্ত্রবাদীদের অভিযোগ, ওলির সরকার প্রতিবাদীদের উপর অত্যধিক কঠোর নীতি প্রয়োগ করছে। সেই কারণেই শুক্রবারের পরিস্থিতি হিংসাত্মক হয়ে পড়েছিল। শাসক জোট এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। নেপাল সরকারের সূত্র উল্লেখ করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, প্রাক্তন রাজার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের ভাবনাচিন্তা চলছে। তাঁকে গ্রেফতার করা হতে পারে বা গৃহবন্দি করে রাখা হতে পারে। জ্ঞানেন্দ্রের যাতায়াতের স্বাধীনতাও খর্ব করা হতে পারে।
শুক্রবার নেপালের হিংসাত্মক বিক্ষোভে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ, রাজতন্ত্রের সমর্থকেরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দফতরে হামলা চালিয়েছেন, ঢিল ছুড়েছেন, দোকানপাট লুট করেছেন এবং একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন।
জ্ঞানেন্দ্র নেপালের রাজার পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হন ২০০৬ সালে। এর পরে ২০০৮ সালের মে মাসে সংবিধান সংশোধন করে ২৪০ বছরের পুরনো রাজতন্ত্র ভেঙে নেপালে প্রতিষ্ঠিত হয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা। ২০১৫ সালে অনুমোদিত হয় নতুন ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ সংবিধান। রাজতন্ত্রের সময়ে নেপাল হিন্দুরাষ্ট্র হিসাবেই পরিচিত ছিল। আবার সেই অবস্থায় ফেরার দাবি উঠেছে। গণতন্ত্র ভেঙে ফেলার পক্ষে সরব হচ্ছেন বহু মানুষ। শুক্রবারের বিক্ষোভে তারই প্রতিফলন ঘটেছিল। এ বার প্রাক্তন রাজাকে আড়াল করে রাজতন্ত্রের দাবি দমিয়ে রাখার পথে হাঁটতে চলেছে নেপাল সরকার।
We hate spam as much as you do