সোমবারের দুর্ঘটনার নেপথ্যে কী কারণ, তা নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে। রেলকর্মীদের একাংশের মতে, মালগাড়ির চালকের দোষেই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটল! তবে সত্যিই কি তাই? রেলের সূত্রের দাবি, সোমবার ভোর থেকেই অকেজো ছিল রাঙাপানি এবং চটের হাটের মাঝের স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল পরিষেবা। তাই আংশিক ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হয়। রাঙাপানি স্টেশনের স্টেশন মাস্টারের ‘কাগুজে অনুমতি’র ভিত্তিতেই ট্রেন চলাচল করছিল। ওই সূত্রে দাবি করা হয়, কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং মালগাড়ি— দুই ট্রেনের চালকের কাছেই ছিল সেই অনুমতিপত্র।
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা কতটা ভয়াবহ? ব্যার্থ প্রশাসন?
18 Jun 2024,
এনজেপি থেকে শিয়ালদাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস সোমবার সকালে এনজেপি থেকে কিছুটা দূরে রাঙাপানিতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। পিছন থেকে একটি মালগাড়ি ট্রেনটিকে ধাক্কা মারে।
ঘটনার পর গোটা দেশে হইচই শুরু হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে প্রচুর অ্যাম্বুল্যান্স। পৌঁছেছেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সদস্যরা।যাঁরা সামনে থেকে দেখেছেন তাঁরা ঘটনার ভয়াবহতা প্রথমে আঁচ করতে পারেননি। মালগাড়িটি কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনে ধাক্কা মারায় ট্রেনটির পিছনের দুটি কামরা উঁচু হয়ে যায়। মালগাড়ির ইঞ্জিন সহ একাধিক কামরা লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। একের পর মৃত্য়ুর ঘটনা সামনে আসছে। মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে লাফিয়ে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জখম ৬০ ছাড়িয়েছে বলে পিটিআইয়ের তরফ থেকে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানানো হয়েছে। সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জখমের সংখ্যা শতাধিক। প্রত্যেককে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার তরফ থেকে ১০ টি বাস দেওয়া হয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্য। বাকিদের চিকিৎসা চলছে।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে মৃতদের ২ লক্ষ টাকা করে এককালীন ক্ষতিপূরণ ও জখমদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে ইন্ডিয়ান ইউথ কংগ্রেসের তরফ থেকে সোস্যাল মিডিয়া হ্যান্জেলে পোস্ট করে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে কবচ কাজ করল না কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
এদিকে রেলমন্ত্রকের তরফেও মৃতের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা, গুরুতর জখমদের ২ লক্ষ টাকা এবং অল্প আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবারের দুর্ঘটনার নেপথ্যে কী কারণ, তা নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে। রেলকর্মীদের একাংশের মতে, মালগাড়ির চালকের দোষেই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটল! তবে সত্যিই কি তাই? রেলের সূত্রের দাবি, সোমবার ভোর থেকেই অকেজো ছিল রাঙাপানি এবং চটের হাটের মাঝের স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল পরিষেবা। তাই আংশিক ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হয়। রাঙাপানি স্টেশনের স্টেশন মাস্টারের ‘কাগুজে অনুমতি’র ভিত্তিতেই ট্রেন চলাচল করছিল। ওই সূত্রে দাবি করা হয়, কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং মালগাড়ি— দুই ট্রেনের চালকের কাছেই ছিল সেই অনুমতিপত্র। সেই অনুমতিপত্রের কারণে সিগন্যাল লাল থাকলেও চালক নিয়ন্ত্রিত গতিতে ট্রেন চালাতে পারছিলেন। সোমবারের ক্ষেত্রে ঠিক কী ঘটেছিল, কোন ট্রেনের গতি কত ছিল, কী ভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনে চলে এল মালগাড়ি— সেই সব প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজা হচ্ছে। যদিও রেলের তরফ থেকে দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি।
We hate spam as much as you do