১৯৩৩ সালে এডলফ হিটলার জার্মানিতে ক্ষমতার সময় আইন্সটাইন বার্লিন একাডেমি অব সায়েন্সের অধ্যাপক ছিলেন। ইহুদী হওয়ার কারণে আইনস্টাইন সে সময় দেশত্যাগ করে আমিরেকায় চলে আসেন এবং আর জার্মানিতে ফিরে যান নি। আইনস্টাইন পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের বিরুদ্ধে ছিলেন। তিনি ব্রিটিশ দার্শনিক বার্টান্ড রাসেলের সঙ্গে মিলে আণবিক বোমার বিপদের কথা তুলে ধরে রাসেল-আইনস্টাইন ইশতেহার রচনা করেন।
১৪ই মার্চ! জন্মদিবসে আলবার্ট আইনস্টাইন ও সত্যের সন্ধান
‘ধর্ম ছাড়া যে বিজ্ঞান সেটা হল পঙ্গু আর বিজ্ঞান ছাড়া যে ধর্ম সেটা হল অন্ধ’ - বিখ্যাত উক্তিটি আলবার্ট আইনস্টাইনের। আলবার্ট আইনস্টাইন একজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী। ঊনবিংশ শতাব্দীর সর্ব শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী।
১৯৯৯ সালে টাইম সাময়িকী আইনস্টাইনকে শতাব্দীর সেরা ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করে।
এছাড়া বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানীদের এক ভোটগ্রহণের মাধ্যমে তাকে প্রায় সবাই সর্বকালের সেরা পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
আজ আইনস্টাইনের জন্মদিন। ১৮৭৯ সালের ১৪ মার্চ জার্মানীর উল্ম শহরে এ পদার্থ বিজ্ঞানী জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব কাটে মিউনিখে। আইনস্টাইনের বাবা-মা ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ মধ্যবিত্ত ইহুদি। বাবা হেরমান আইনস্টাইন মূলত পাখির পালকের বিছানা তৈরি ও বাজারজাত করতেন। পরবর্তীতে তিনি মিউনিখে একটি তড়িৎ যন্ত্র নির্মাণ কারখানা স্থাপন করে মোটামুটি সফলতা পান।
আইনস্টাইন পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রচুর গবেষণা করেছেন এবং নতুন উদ্ভাবন ও আবিষ্কারে তার অবদান অনেক। তার বিখ্যাত আপেক্ষিকতার তত্ত্ব এবং বিশেষত ভরশক্তি সমতুল্যতার সূত্র পর্দার্থ বিজ্ঞানের এক অমীয় অধ্যায় সূচনা করে। তার অন্যান্য অবদানের মধ্যে রয়েছে আপেক্ষিকতা ভিত্তিক বিশ্বতত্ত্ব, কৈশিক ক্রিয়া, ক্রান্তিক উপলবৎ বর্ণময়তা, পরিসাংখ্যিক বলবিজ্ঞানের চিরায়ত সমস্যাসমূহ ও কোয়ান্টাম তত্ত্বে তাদের প্রয়োগ, অণুর ব্রাউনীয় গতির একটি ব্যাখ্যা, আণবিক ক্রান্তিকের সম্ভ্যাব্যতা, এক-আণবিক গ্যাসের কোয়ান্টাম তত্ত্ব, নিম্ন বিকরণ ঘনত্বে আলোর তাপীয় ধর্ম (যা ফোটন তত্ত্বের ভিত্তি রচনা করেছিল), বিকিরণের একটি তত্ত্ব যার মধ্যে উদ্দীপিত নিঃসরণের বিষয়টিও ছিল, একটি একীভূত ক্ষেত্র তত্ত্বের প্রথম ধারণা এবং পদার্থবিজ্ঞানের জ্যামিতিকীকরণ।
স্নাতক হবার পর আইনস্টাইন প্রায় ২ বছর চাকরির জন্য ঘোরাঘুরি করে প্রাক্তন এক সহপাঠীর বাবার দফতরে চাকরি পান। সেটি ছিল ফেডারেল অফিস ফর ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি নামক একটি পেটেন্ট অফিস। তার চাকরি ছিল সহকারী পরীক্ষকের।
আইনস্টাইন ১৯০৩ সালের ৬ জানুয়ারি মিলেভা মেরিককে বিয়ে করেন। স্ত্রী মিলেভা সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন, ‘মিলেভা এমন এক সৃষ্টি যে আমার সমান এবং আমার মতই শক্তিশালী ও স্বাধীন।’
১৯০৫ সালে পেটেন্ট অফিসে কর্মরত থাকাকলিন সময়ে আইনস্টাইন ‘অ্যানালেনদের ফিজিক’ নামক জার্মান বিজ্ঞান সাময়িকীতে চারটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। গবেষণাপত্র চারটির বিষয় ছিল:
* আলোক তড়িৎ ক্রিয়া - আইনস্টাইনের আলোক তড়িৎ সমীকরণ প্রতিপাদন। * ব্রাউনীয় গতি - আণবিক তত্ত্বের সমর্থন।
* তড়িৎগতিবিজ্ঞান - আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব আবিষ্কার। * ভর-শক্তি সমতুল্যতা - বিখ্যাত E=mc2 সূত্র প্রতিপাদন।
এ চারটি গবেষণাপত্র বিজ্ঞানের ইতিহাসে বিস্ময়কর ঘটনা হিসেবে স্বীকৃত এবং এগুলোর কারণেই ১৯০৫ সালকে আইনস্টাইনের জীবনের ‘চমৎকার’ বছর হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
তার বুদ্ধির প্রখরতার কারণে বুদ্ধিসম্পন্ন কাউকে বা কোনো কিছুকে বুঝাতে মানুষ ‘আইনস্টাইন’ শব্দটি ব্যবহৃত করে।
১৯৫৫ সালের এপ্রিল ১৮ এ বিশ্ববিখ্যাত নোবেলজয়ী মহাবিজ্ঞানী ৭৬ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন।
We hate spam as much as you do