Tranding

07:57 PM - 01 Dec 2025

Home / Opinion / যোগ‍্য প্রার্থীদের পুনর্বহাল ও নিরবচ্ছিন্ন কার্যকালের দাবিতে ABTA সুপ্রিম কোর্টে যাবে।

যোগ‍্য প্রার্থীদের পুনর্বহাল ও নিরবচ্ছিন্ন কার্যকালের দাবিতে ABTA সুপ্রিম কোর্টে যাবে।

হতাশায় ভুগতে শুরু করেছেন শিক্ষক পদের চাকরি প্রার্থীদের একাংশ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ পাত্রসায়রের কৃশাণু ভট্টাচার্য বর্তমানে কলকাতায় চাকরির পরীক্ষার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘নিয়োগে অস্বচ্ছতা দেখে হতাশ লাগছে। সব দেখেশুনে মনোবল ভেঙে যাচ্ছে। শিক্ষকতা ছাড়াও অন্য চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।’’

যোগ‍্য প্রার্থীদের পুনর্বহাল ও নিরবচ্ছিন্ন কার্যকালের দাবিতে ABTA সুপ্রিম কোর্টে যাবে।

যোগ‍্য প্রার্থীদের পুনর্বহাল ও নিরবচ্ছিন্ন কার্যকালের দাবিতে ABTA সুপ্রিম কোর্টে যাবে।

 ২৪ এপ্রিল ২০২৪ 

গুরুত্বপূর্ণ ১০৪ বছরের পুরনো বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি সম্পাদক সুকুমার পাইন ঘোষণা করেছেন গতকালের হাইকোর্টের রায় যে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষকের কাজ চলে গেছে তাদের মধ্যে যারা যোগ্য তাদের জন্য এ বি টি এ সুপ্রিম কোর্টে যাবে এবং তাদের পুনর্বহাল ও নীরবচ্ছিন্ন কার্যকালের দাবি করবে। এই মর্মে এবিটিএ অনুরোধ করেছে কেউ যেন বিভ্রান্ত না হন এবং এবিটিএ এই কাজ বিনামূল্যে করবে বলে ঘোষণা করেছে।  নিঃসন্দেহে এই বামপন্থী শিক্ষক সংগঠনের শিক্ষকদের পাশে থাকবার এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।


এসএসসি-র ২০১৬ সালের শিক্ষক, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি নিয়োগের প্যানেল আদালত পুরোপুরি বাতিল করায় বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছেন শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের চাকরি নিয়ে টানাটানি পড়বে কি না, এই নিয়ে পরিচিতজনদের উদ্বেগ অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন যাঁরা, তাঁদের অনেকে স্বপ্নভঙ্গের কষ্ট পাচ্ছেন।


সূত্রের দাবি, ওই প্যানেল থেকে দু’জেলায় নিয়োগ হয়েছেন বেশ কয়েকশো জন। কিন্তু অস্বস্তির কাঁটা বিঁধছে তাঁরও বেশি শিক্ষক ও তাঁদের পরিজনদের। তাঁরা হয়তো এসএসসি-র মাধ্যমে আগে নিযুক্ত হয়েছেন। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ২০১৩ সালে নিযুক্ত বাঁকুড়ার এক হাই স্কুলের শিক্ষকের কথায়, ‘‘শিক্ষক নিয়োগ ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর থেকেই বছর খানেক ধরে আত্মীয়দের কাছেই যেন অবিশ্বাসের পাত্র হয়ে উঠেছি। স্ত্রীকে তার বাপের বাড়ির আত্মীয়েরা ফোন করে আমার চাকরি থাকছে কি না জানতে চাইছেন। আমার আত্মীয়েরাও চাকরি থাকবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন। মানসিক যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছি।’’

সোনামুখীর ধুলাই আর কে এম উচ্চবিদ্যালয়ের সহ-শিক্ষক শিবরাম মণ্ডল বলেন, ‘‘এই রায়ের পরে গ্রামে-গঞ্জে শিক্ষকদের তীর্যক মন্তব্য শুনতে হচ্ছে। শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মানের যে জায়গা ছিল তাতে কোথাও যেন ধাক্কা লাগল। কেবল ২০১৬ সালের এসএসসি-র প্যানেলে চাকরির প্রাপকেরাই নয়, সমস্ত শিক্ষকই অস্বস্তিতে পড়েছেন এই ঘটনায়।’’


একটি উচ্চবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সোনামুখীর পার্থ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘এই রায়ে খুবই মানসিক কষ্ট পেয়েছি। শিক্ষক হিসেবে জীবনে অনেক সম্মান পেয়েছি। কিন্তু এই পেশার মর্যাদা যে ভাবে ক্ষুণ্ণ হল, তা বলার ভাষা নেই। যোগ্য অযোগ্য এ সব শব্দ শিক্ষকের মত মহান পেশার আগে বসছে, কোথায় নেমে গেলাম আমরা!’’

পুরুলিয়া ১ ব্লকের লাগদা হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক কমলেশ আচার্য ১৯৯৮ সালে এসএসসি-র প্রথম ব্যাচের পরীক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষকদের সম্পর্কে আমাদের শ্রদ্ধা ছিল। আমরাও চাকরিতে যোগ দিয়ে তার কিছুটা উপলব্ধি করেছি। কিন্তু যে দিন থেকে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তারপর থেকে সমাজের নানা স্তরের মানুষজনের শিক্ষকদের একাংশের সম্পর্কে শ্রদ্ধার সেই জায়গাটা টলে গিয়েছে। সেটাও উপলব্ধি করছি।’’

হতাশায় ভুগতে শুরু করেছেন শিক্ষক পদের চাকরি প্রার্থীদের একাংশ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ পাত্রসায়রের কৃশাণু ভট্টাচার্য বর্তমানে কলকাতায় চাকরির পরীক্ষার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘নিয়োগে অস্বচ্ছতা দেখে হতাশ লাগছে। সব দেখেশুনে মনোবল ভেঙে যাচ্ছে। শিক্ষকতা ছাড়াও অন্য চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।’’ ভূগোলে স্নাতকোত্তর সোনামুখীর এক যুবক বলেন, ‘‘এ ভাবে নিয়োগ হলে যতই পড়ি, এ রাজ্যে কোনওদিন চাকরি পাব না। বাধ্য হয়ে এ বার ভিন্‌ রাজ্যে সরকারি চাকরির চেষ্টা করছি। কিছুদিন আগেই ঝাড়খণ্ডের টেট দিয়ে এলাম।’’


এরই মধ‍্যে এবিটিএ-র পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক ব্যোমকেশ দাসের মতে, ‘‘ওই প্যানেলে বহু যোগ্য রয়েছেন। তাঁদের সম্মানহানির দায় কে নেবে? মাঝখান থেকে অনেক বেকার তরুণ-তরুণীর স্বপ্ন নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’ 

Your Opinion

We hate spam as much as you do